🌟 প্রশ্ন:
কীভাবে রাজার চিঠি অমলের কাছে এসে পৌঁছালো — ‘ডাকঘর’ নাটক অবলম্বনে বিশ্লেষণ করো। (৬ নম্বর)
উত্তর):
১. অমলের অসুস্থতা ও মনোবাসনা:
অমল খুব অসুস্থ, তাই ডাক্তার তাকে বাইরে যেতে মানা করেছেন। কিন্তু অমলের মন চায় জানালার বাইরের পৃথিবী দেখতে, অজানা দেশে ঘুরে বেড়াতে, নতুন মানুষের সঙ্গে কথা বলতে। তার কল্পনার জগতে সে মুক্তভাবে বাঁচে, যদিও শরীর বন্দি ঘরের ভিতরেই।
২. রাজার ডাকঘরের খবর:
প্রহরীর কাছ থেকে অমল জানতে পারে, রাজা তার বাড়ির কাছেই একটি ডাকঘর খুলেছেন। সে শোনে, রাজা ছোট ছোট ছেলেমানুষদের চিঠি লেখেন। এই কথায় অমলের মনে গভীর আনন্দ ও আশা জাগে— সে ভাবে, রাজা নিশ্চয়ই তাকেও একটি চিঠি পাঠাবেন।
৩. রাজার চিঠির প্রতীক্ষা:
এরপর অমল সারাক্ষণ রাজার চিঠির অপেক্ষায় থাকে। মোড়ল, ছেলেরা, আর হরকরাদের কাছ থেকে খবর জানতে চায় — রাজার চিঠি এসেছে কিনা। তার মনের সব আশা এখন রাজার চিঠি পাওয়া ঘিরেই।
৪. ঠাকুরদার আশ্বাস:
ফকিরবেশী ঠাকুরদা অমলকে বলে, রাজার চিঠি রওনা হয়ে গেছে, এখন পথে আসছে। ঠাকুরদার কথায় অমল কল্পনায় দেখে, পাহাড়ের দিক থেকে রাজার হরকরারা চিঠির বোঝা নিয়ে নামছে। এতে তার মন আরও আনন্দে ভরে ওঠে।
৫. মোড়লের পরিহাস ও অমলের বিশ্বাস:
মোড়ল মজা করে একটি ফাঁকা কাগজ অমলকে দিয়ে বলে, “এই নাও রাজার চিঠি।” কিন্তু সরলমনা অমল সেটিকেই সত্যি চিঠি ভেবে খুব খুশি হয়। তার কাছে সেই কাগজটাই রাজার ভালোবাসার প্রতীক হয়ে ওঠে।
৬. রাজার চিঠির গভীর অর্থ ও তাৎপর্য:
ঠাকুরদা বলে, রাজা এখন নিজে আসছেন অমলকে দেখতে, সঙ্গে রাজকবিরাজও আসবেন। আসলে এটি কোনো বাস্তব চিঠি নয়, ঈশ্বরের বার্তা বা ‘পরম ডাক’। অমল মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে — তাই এই চিঠি প্রতীক হয়ে আসে আত্মার মুক্তির, ঈশ্বরের সঙ্গে মিলনের।
👉 উপসংহার:
‘রাজার চিঠি’ আসলে কোনো কাগজ নয়, এটি অমলের আত্মার মুক্তির প্রতীক। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সে পার্থিব জীবন থেকে মুক্তি পেয়ে পরমাত্মার সঙ্গে মিলিত হয়। তাই এইভাবে রাজার চিঠি অমলের কাছে এসে পৌঁছায়।

পোস্ট পড়ার পর ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করতে ভুলবেন না ।
( After reading post not forgetting comments. ) 👆